Career

টক্সিক বসের যন্ত্রণায় পুড়ছেন? পুরুষদের জন্য ১০টি স্ট্র্যাটেজিক উপায় — চাকরি হারানো ছাড়াই বাঁচুন আত্মসম্মান নিয়ে

লিখেছেন: তন্ময় সরকার উজ্জ্বল | তারিখ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫



সব পুরুষই যে ব্যবসার ময়দানে ঝাঁপ দিতে প্রস্তুত, এমন নয়। কেউ কেউ দায়িত্ব পালন করছেন কর্পোরেট অফিসের ৯-৫ রুটিনে, যেখানে প্রতিদিন বসের বিষাক্ত আচরণ, পেটি রাজনীতি, আর অহংকারের দমন নীতিতে পিষ্ট হচ্ছেন। অনেক সময়ই অফিস যেন হয়ে ওঠে একেকটা মানসিক যুদ্ধক্ষেত্র।

কিন্তু একটা সত্য হলো—চাকরির মানে দাসত্ব নয়।

পুরুষ হিসেবে আপনি শুধু একজন কর্মী নন। আপনি দক্ষতা, মূল্য এবং সমাধান নিয়ে আসেন। টক্সিক বসদের মোকাবেলায় আগুন দিয়ে আগুন নিভানো যায় না—প্রয়োজন হয় কৌশলের। নিচে দেওয়া হলো ১০টি কার্যকর ও কৌশলগত পরামর্শ যা আপনাকে আত্মমর্যাদা রক্ষা করে কাজ করতে সাহায্য করবে:


১. খেলার নিয়ম শিখুন, তারপর খেলুন

তরল আবেগ নয়, কৌশল হোক অস্ত্র। অফিস রাজনীতি, কার সঙ্গে কার সম্পর্ক, এবং তথ্য কীভাবে প্রবাহিত হয় তা বোঝা জরুরি। যুদ্ধের আগে মানচিত্র জানা থাকলে জেতা সহজ হয়।

২. সব কিছু নথিভুক্ত করুন — যেন কোর্টে যাচ্ছেন

ইমেইল, চ্যাট, কথোপকথন — সব সংরক্ষণ করুন। যদি বস সীমা ছাড়িয়ে যান, তখন এই তথ্য আপনাকে সুরক্ষা দিতে পারে। মেমোরি নয়, প্রমাণই আসল অস্ত্র।

৩. আবেগ নয়, কৌশলে প্রতিক্রিয়া দিন

চিৎকার করলে আপনি দুর্বল প্রমাণিত হন। টক্সিক বসরা এটিই চান। শান্ত থাকুন, প্রফেশনাল থাকুন, আত্মনিয়ন্ত্রণই আপনার শক্তি।

৪. সমাধানের ভাষায় কথা বলুন, অভিযোগের নয়

“আপনি আমাকে চাপ দেন” বলার বদলে বলুন, “এই টাস্কটি অন্য দায়িত্বের সঙ্গে ওভারল্যাপ করছে এবং ডেলিভারিতে দেরি করছে।” যুক্তি দিয়ে কথা বলুন, আবেগ নয়।

৫. নীরবে বন্ধুত্ব গড়ুন

আপনি একা নন। যারা অফিসে সম্মানিত, তাদের সঙ্গে নিঃশব্দে সম্পর্ক গড়ুন। প্রয়োজনে তাদের সহযোগিতা বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

৬. গসিপ নয়, প্রমাণ দিন

অন্য সহকর্মীর কাছে বসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা অনেক সময়ই বিপদ ডেকে আনে। এই কথাই আবার ঘুরে বসের কানে পৌঁছে যায়। তাই চুপ থাকুন, কিন্তু ডকুমেন্টেশন ঠিক রাখুন।

৭. নিজেকে অপরিহার্য করে তুলুন

আপনি এতটাই দক্ষ হোন যে, আপনাকে ছাড়া অফিস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বস হয়তো আপনাকে পছন্দ করবে না, কিন্তু হারাতে ভয় পাবে।

৮. নম্রভাবে সীমা নির্ধারণ করুন

রাতে কল করলে পেশাদারভাবে বলুন, “ধন্যবাদ, এটি আমি আগামীকাল সকালে হ্যান্ডেল করব।” ধারাবাহিকভাবে সীমারেখা বজায় রাখুন।

৯. উন্নয়ন করুন বা বেরিয়ে যান — কিন্তু নিঃশক্ত হবেন না

যদি পরিস্থিতি অসহ্য হয়ে যায়, প্যাসিভ না থেকে প্রস্তুতি নিন। সিভি আপডেট করুন, নতুন স্কিল শিখুন। চাকরি রেখে বিকল্প পথ তৈরি করুন।

১০. বস না হলেও বসের মতো কাজ করুন

আপনার কাজের মান এমন হোক, যা শত্রুরাও সম্মান করবে। ব্যবসা হোক বা চাকরি—উৎকৃষ্টতা আপনাকে শক্তি দেয়।


শেষ কথা:
আপনি এখনও CEO নন, তাতে কী! আপনার আত্মমর্যাদা এবং কৌশলের মাধ্যমে যেকোনো কক্ষেই আপনি নেতা হয়ে উঠতে পারেন। একটি বিষাক্ত পরিবেশ যেন আপনার সক্ষমতাকে খর্ব না করে। জ্ঞান দিয়ে উঠুন, স্ট্র্যাটেজিতে চলুন এবং দীর্ঘমেয়াদী খেলায় জয়ী হোন।

কারণ দিন শেষে, আপনার বেতন কে দেয় সেটা নয়—আপনার মানসিক শান্তি কে ধরে রাখে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button